ছবি: নয়া দিগন্ত


পায়রা সমুদ্র বন্দরের জন্য প্রাক্কলিত দরের চেয়ে বেশি দামে কেনা হচ্ছে মোবাইল হারবার ক্রেইন। প্রাক্কলিত ব্যয়ে এই ক্রেইন কেনার জন্য ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছিল ৮০ কোটি টাকা। এখন সেই ক্রেইনই কেনা হচ্ছে ১০৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে। টাকার অঙ্কে ব্যয় বৃদ্ধির পরিমাণ ২৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। শতকরা হিসাবে যা ৩৭ শতাংশ বেশি। এই ক্রেইনটি সরবরাহ করার দায়িত্ব পেতে যাচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ‘সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড’।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের এই ক্রয় প্রস্তাবটি কাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র সভায় এ-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে বলে জানা গেছে।

এ দিকে, এই দর বৃদ্ধির বিষয়ে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পের ডিপিপি প্রণয়নের সময় ইউরোর দর ছিল বাংলাদেশী টাকায় ৯৭ টাকা ৩৫ পয়সা। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি এ বিনিময় হার দাঁড়িয়েছে ১১৭ টাকা ৯৭ পয়সা। অর্থাৎ প্রতি ইউরোতে ২০ টাকা ৬২ পয়সা বেড়েছে। এ ছাড়া শিল্পের কাঁচামাল ও জাহাজের ভাড়া বৃদ্ধির কারণেও ব্যয় বেড়েছে। টিইসি মোবাইল হারবার ক্রেনের জরুরি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে ডিপিপি প্রণয়নকালের প্রাক্কলন অপেক্ষা ৩৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি দরে ক্রয় প্রস্তাব গ্রহণের সুপারিশ করেছে। তাই এই ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণায় সূত্রে জানা যায়, মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পায়রা সমুদ্র বন্দরের প্রথম টার্মিনাল এবং আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ৪ হাজার ৫১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মেয়াদকাল ধরা হয়েছিল ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত।

প্রকল্পের অনুমোদিত ডিপিপিতে ক্রেন স্থাপনের কাজটি উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করে সম্পাদনের জন্য নির্ধারিত থাকলেও পিপিআর ২০০৮-এর বিধি-৮৪ক(২) অনুযায়ী হোপ-এর অনুমোদনক্রমে এক ধাপ দুই খাম দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। এটি ক্রয় পরিকল্পনার জিডি-৫ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত, এর বিপরীতে ৮০ কোটি টাকার সংস্থান রয়েছে। এ কাজের প্রাক্কলিত মূল্য ৮০ কোটি টাকা।
সূত্র জানায়, কাজটি সম্পাদনের লক্ষ্যে পিপিআর-২০০৮ অনুসরণে ২০২২ সালের ১৪ জুলাই দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি স্থানীয় কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এবং সিপিটিইউ-এর ওয়েবসাইট ও আন্তর্জাতিক মিডিয়া ‘ডিজি মার্কেট’-এ প্রকাশিত হয়। বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে ৮টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র ক্রয় করে। দরপত্র দাখিলের নির্ধারিত দিনে ৩টি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে।

সূত্র জানায়, দরপত্র উন্মুক্তকরণ ও মূল্যায়নের লক্ষ্যে পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক দরপত্র উন্মুক্তকরণ কমিটি এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি (টিইসি) গঠন করা হয়। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠান তিনটি হচ্ছে- সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড; চীনা প্রতিষ্ঠান ‘নানাটং রেইনবো হেভি মেশিনারিজ’ এবং হংকং-এর প্রতিষ্ঠান ‘সানি ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি চীনা প্রতিষ্ঠান ‘নানাটং রেইনবো হেভি মেশিনারিজ’ এবং হংকং-এর প্রতিষ্ঠান ‘সানি ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড’কে কারিগরিভাবে নন-রেসপন্সিভ হিসেবে ঘোষণা করে। অন্য দিকে দরপত্রের সব শর্ত পূরণ করায় ‘সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডকে কমিটি টেকনিক্যালি রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচনা করে, যা পরবর্তীতে হোপ কর্তৃক অনুমোদিত হয়।

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশে ‘সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেড’-এর দাখিল করা দর ১০৯ কোটি ৫৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটির অনুকূলে নোটিফিকেশন অব অ্যাওয়ার্ড জারি করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তাবিত দর প্রাক্কলিত দরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ৯১ শতাংশ বেশি।
জানা গেছে, সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির পরবর্তী সভায় এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। কমিটি প্রস্তাবটিতে অনুমোদন দিলে দরপত্রে সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করা হবে এবং ক্রেন সংগ্রহের পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।


   


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।