da indrjitt prsad
ছবি: সমকাল

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস

১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। দিনটি উপলক্ষ্যে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নানা পরামর্শমূলক আলোচনা ও সমকালকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডায়াবেটিস, থাইরয়েড  ও হরমোন রোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ।

প্রশ্ন: কবে থেকে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: সারাবিশ্বে প্রায় ১৬০টি দেশে ১৪ নভেম্বর ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়ে আসছে। ১৯২১ সালে ইনসুলিন আবিষ্কারক বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং-এর জন্মদিনে দিবস উদযাপিত হয়।

প্রশ্ন: সাম্প্রতিক সময়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা কেমন?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: পরিসংখ্যান বলছে, সারা পৃথিবীর মতো বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। করোনার আগে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ছিল ৯৩ লাখ। বর্তমান ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৩১ লাখ। কাজেই বলা যায়, ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ প্রায় সবাই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।

প্রশ্ন: কোন বয়সের মানুষ ডায়াবেটিসে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: ডায়াবেটিস সব বয়সের মানুষের হতে পারে। প্রচলিত ভুল ধারণা, ডায়াবেটিস শুধু বৃদ্ধদের হয়ে থাকে। কিন্তু আসলে তা নয়। শিশু থেকে বৃদ্ধ সব বয়সের মানুষই আক্রান্ত হন। জন্মের পর থেকে প্রথম ৬ মাসে এক ধরণের ডায়াবেটিস হয় তা হলো নিওনেটাল ডায়াবেটিস। ৬ মাস থেকে ২০ বছরের মধ্যে যে ডায়াবেটিস হয় তা হলো টাইপ-১ ডায়াবেটিস। এরপরে যে ডায়াবেটিস হয় তা হলো টাইপ-২ ডায়াবেটিস। বাংলাদেশে প্রায় ৯৫ শতাংশ মানুষ টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। কিন্তু অনেক সময় শারীরিক স্থূলতা, খেলাধুলা না করা, অতিরিক্ত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার এবং স্মার্টফোনের প্রতি আসক্তির কারণে শিশুদের মধ্যে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়।

প্রশ্ন: ডায়াবেটিসের কী বংশগত রোগ?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: ডায়াবেটিসের সঙ্গে বংশগতির গভীর যোগাযোগ আছে। মা-বাবার মধ্যে যদি কারও ডায়াবেটিস হয় তাহলে সন্তানদের মধ্যে ডায়াবেটিস হওয়ার প্রবণতা থাকে ১০ ভাগ। আর যদি মা-বাবা দুজনেরই ডায়াবেটিস থাকে তাহলে প্রবণতা বেড়ে দাঁড়ায় ৬০ ভাগ।

প্রশ্ন: কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবো মানুষটি ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, ৫০ শতাংশ মানুষই বুঝতে পারে না সে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তেমন কোনো লক্ষণ  প্রকাশ পায়না। তারপরও সাধারণ যে সব লক্ষণ দেখা যায় তা হলো ঘন ঘন প্রস্রাব, বেশি বেশি পানির পিপাসা, ওজন কমে যাওয়া, প্রচণ্ড দূর্বলতা ও ঝিমানি লাগা।

প্রশ্ন: কখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: যখন কোনো ব্যক্তির ৪০ বছরের বেশি বয়স হয় এবং বংশগতিতে ডায়াবেটিস থাকে তখন অবশ্যই ডায়াবেটিস পরীক্ষা করতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসাসেবা নিতে হবে।

প্রশ্ন: কোন ধরণের রোগ ডায়াবেটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: ডায়াবেটিসের নানা রকম দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা আছে। যেমন কিডনি খারাপ হওয়া, চোখ খারাপ হওয়া, ব্রেন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক, রক্তনালি ব্লক অন্যতম। সব জটিলতাই প্রতিরোধযোগ্য। ভয় না পেয়ে সচেতন হলেই ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

প্রশ্ন: কারা ডায়াবেটিসের ঝুকিতে বেশি থাকে? 
ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: হার্ট, কিডনি, প্রেশার এবং টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে বেশি থাকেন।

প্রশ্ন: কীভাবে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে পারি?

ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: শতকরা ৮০ ভাগ মানুষ যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন তা প্রতিরোধযোগ্য। ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যে সব কাজ মেনে চলতে হবে তার মধ্যে সঠিক খাদ্যাভাস মেনে চলা, নিয়মিত হাঁটাচলা, পরিপূর্ণ ঘুম ও চাপমুক্ত জীবন কাটানো। তা ছাড়া ওজন নিয়ন্ত্রণ  করতে হবে। উচ্চতার সঙ্গে ওজনের অনুপাত সঠিক থাকতে হবে। যদি অনুপাত ২:৩ তুলনার বেশি হয় তাহলে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

প্রশ্ন: ডায়াবেটিস হওয়ার পর প্রতিকার কীভাবে করতে হবে?
ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ: ডায়াবেটিস যাদের হয় তাদের জন্য পরামর্শ (4D) মেনে চলা যেমন ডায়েট, ডিসিপ্লিন, ড্রাগ এবং ড্রিম। তা ছাড়া নিয়ম করে ৬ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে, প্রতিদিন আধা ঘণ্টা হাঁটতে হবে, খাদ্যের মধ্যে সুষম খাবার খেতে হবে। কিছু অপচিকিৎসা আছে যেমন বিভিন্ন পাতা খাওয়া, কিটো ডায়েট— এসব কিছু থেকে বিরত থাকতে হবে। সবশেষ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলেই ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

অনুলিখন- জান্নাত নিপু।

/এসএইচ/ 


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।