ছবি: নয়া দিগন্ত


নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় বিএনপি কার্যালয় ও নেতাদের বাড়িঘর, দোকানপাটে আওয়ামী লীগ কর্মীরা হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করলেও উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই একের পর এক মামলা দিচ্ছে পুলিশ। গত কয়েক দিনে দু’টি মামলা দেয়া হয়েছে। করা হচ্ছে গ্রেফতার। তল্লাশি করা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি। ভয়ভীতি দেখিয়ে উৎকোচ নেয়া হচ্ছে। ফলে আন্দোলন সচল থাকলেও গ্রেফতার আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিএনপিসহ সাধারণ মহলে।
জানা যায়, কেন্দ্র ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি সফল করতে নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন । অপর দিকে জানমাল রক্ষার ইস্যুতে অবরোধ কর্মসূচিকে প্রতিহত করতে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ নামে মিছিল-মিটিং করছে। এরই মধ্যে গত বুধবার রাতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ডা. রফিকুল ইসলাম হিলালীর কেন্দুয়া পৌর সদরস্থ বাসভবনের ফটক ভেঙে বাসায় হামলা চালায় এবং উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করেন। হামলা ও ভাঙচুর করেন বিএনপির অন্যতম নেতা দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়ার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক নুর আলম জেসির থানা গেটসংলগ্ন দোকান। উপজেলা যুবদলের যুগ্ম অহ্বায়ক নাসির খন্দকারের চেম্বারে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় এবং পুড়িয়ে দেয় মোটরসাইকেল। ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় যুবদল নেতা আল আমিনের ওষুধের দোকান। কিন্তু উল্টো বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেই মামলা দেয় পুলিশ। সরকার পতনের উদ্দেশ্যে অন্তর্ঘাতমূলক কাজের মাধ্যমে সরকারি স্থাপনা ধ্বংস করাসহ পুলিশের কাজে বাধা, ককটেল বিস্ফোরণ ও মশাল মিছিলের অভিযোগ এনে এসআই আলীমুর রাজি বাদি হয়ে শনিবার থানায় এই মামলাটি করে। মামলায় জেলা বিএনপির সদস্যসচিব কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম হিলালী, জেলা বিএনপির সদস্য ও কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় জিয়া পরিষদের সহকারী মহাসচিব রোটারিয়ান এম নাজমুল হাসান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদিন ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ভূঁইয়া এবং বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-কাদের সেলিমসহ ১৩৬ জনের নামে এবং ৭০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এর আগে গত ২ নভেম্বর বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় ২৭০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন এসআই দেবাশীষ চন্দ্র দত্ত। মামলা থেকে বাদ যাননি সরকারি চাকরিজীবীরাও। ইতোমধ্যে ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি তল্লাশি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন করে উৎকোচ নেয়া হচ্ছে। ধরিয়ে দেয়া হবে এমন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা। গ্রেফতার আতঙ্কে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন বিএনপির কর্মী, সমর্থক ও নেতারা। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে সাধারণ মহলেও। এ পর্যন্ত ৬০১১ জন বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা হয়েছে কেন্দুয়ায়।
এসব মামলা সাজানো, মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যমূলক উল্লেখ করে ডা. রফিকুল ইসলাম হিলালী, দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদিন ভূঁইয়া, মজিবুর রহমান ভূঁইয়াসহ বিএনপি নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা পুলিশের সামনে আমাদের দলীয় কার্যালয়, বাসাবাড়ি, দোকানপাটে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করেছে। অথচ উল্টো আমাদের বিরুদ্ধেই মামলা দেয়া হয়েছে। গ্রেফতার ও তল্লাশি করা হচ্ছে। গ্রেফতারের ভয় দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয়া হচ্ছে। আন্দোলনকে নস্যাৎ করার হীনমানসে এসব করা হচ্ছে । আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। মামলা, হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, গ্রেফতার যতই করা হোক না কেনো, আমাদের আন্দোলন চলছে এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবেই ইনশাআল্লাহ।
তবে বিএনপির এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কেন্দুয়া থানার ওসি এনামুল হক বলেন, সুনির্দিষ্ট ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে বিস্ফোরিত ককটেলের কয়েকটি টুকরো, বাঁশের লাঠি, জর্দার কৌটাসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে।


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।