ছবি: সমকাল

আসন্ন জলবায়ু সম্মেলনে (কপ ২৮) বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি রাখার বিষয়ে সরকারকে জোর তৎপরতা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতি বা লস অ্যান্ড ড্যামেজের জন্য আলাদা স্বতন্ত্র একটি তহবিল গঠনেরও দাবি জানানো হয়েছে।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘কপ ২৮ জলবায়ু সম্মেলন: সরকার ও নাগরিক সমাজের অভিমত’ শীর্ষক সেমিনারে এ দাবি জানানো হয়।

বক্তারা বলেছেন, ধনী দেশগুলোর কৌশল হচ্ছে কীভাবে কার্বন উদগীরনের দায় দরিদ্র দেশগুলোর ওপর চাপানো যায়। এর উদ্দেশ্য হলো ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা। এসব ক্ষেত্রে ধনী দেশগুলো আর্থিক সহযোগিতার পরিবর্তে দরিদ্র ও বিপদাপন্ন দেশগুলোকে আরও ঋণে জর্জরিত করছে। 

অধিকারভিত্তিক সংগঠন কোস্ট ফাউন্ডেশন, এন অর্গানাইজেশন ফর সোশিও ইকোনমিক ডেভেলামেন্ট, বাংলাদেশ ক্লাইমেট জার্নালিস্ট ফোরাম, ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক, সাউথ এশিয়া-বাংলাদেশ, সেন্টার ফর পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট,  কোস্টাল ডেভেলপমেন্ট পার্টনারশিপ, সেন্টার ফর রুরাল লাইভলিহুড, ইক্যুইটি অ্যান্ড জাস্টিস ওয়ার্কিং গ্রুপ (ইক্যুইটিবিডি), এলইডিআরএস ও এলডিসি ওয়াচ যৌথভাবে এই সেমিনারের আয়োজন করে।

ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিক্সের সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমেদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। ইক্যুইটিবিডি’র রেজাউল করিম চৌধুরীর সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন- বিশেষ অতিথি সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, আলোচক পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক  জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী, ওয়াটার কিপার্স’র শরীফ জামিল, সিপিআরডির মো. শামসুদ্দোহা, পিকেএসএফের ফজলে রাব্বি সাদেকী আহমেদ, সিএসআরএলের জিয়াউল হক মুক্তা, কানসা-বিডি’র সভাপতি রাবেয়া বেগম প্রমুখ। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইক্যুইটিবিডি’র আমিনুল হক ।

মূল প্রবন্ধে আগামী ৩০ নভেম্বর দু্বাইয়ে শুরু হতে যাওয়া এবারের জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বাংলাদেশ দলের কাছে তিনটি বিষয়ে জোর দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। সেগুলো হলো- ১. কার্বন উদগীরণকারী বড় দেশগুলোকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য উদগীরণের লক্ষ্য নিয়ে তাদের জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা পুনর্নির্ধারণ করতে হবে। ২. একটি স্বতন্ত্র লস অ্যান্ড ড্যামেজ তহবিল  গঠন করা। ৩. জলবায়ু অর্থায়নের একটি নতুন ব্যবস্থা যা হবে অনুদাননির্ভর, ঋণনির্ভর নয় এবং অতি বিপদাপন্ন দেশগুলোকে রক্ষায় বিশেষ সহায়তা দিতে হবে।

সেমিনারে জাতিসংঘের কাঠামো সনদের (ইউএনএফসিসিসি) বর্তমান প্রক্রিয়ার কয়েকটি ঘাটতির কথা তুলে ধরেন জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী। 

তিনি বলেন, কোনো বিষয়ে কোনো একটি দেশ সম্মতি না দিলেই আর কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না। তিনি প্রক্রিয়াটি সংস্কারের সুপারিশ করেন, কারণ বিদ্যমান পরিস্থিতি বিশ্বকে একটি গভীর সংকটের দিকে নিয়ে যাচ্ছে এবং অর্জিত সাফল্য হ্রাস করছে। 

তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৫ ডিগ্রিতে রাখার লক্ষ্য পূরণের সাম্প্রতিক অবস্থার ওপর বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে তথ্য সংগ্রহ খুব জরুরি।

ব্যারিস্টার শামীম হায়দার বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনাকে বিশাল লক্ষ্য পূরণের ক্ষেত্রে সীমিত অর্জনসমৃদ্ধ একটি ডুবন্ত জাহাজ হিসেবে উল্লেখ করেন। এর মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই সম্মেলনে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোতে খুব দায়সারাভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আমাদের এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যা সবাই গ্রহণ করবে।

জিয়াউল হক বলেন, কার্বন নির্গমন হ্রাসকে সামনে রেখেই আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক বিকল্পগুলোর ওপর ভিত্তি করে জাতীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

ফজলে রাব্বি সাদেকী বলেন, জলবায়ু তহবিলের নামে অনেক ঋণ আসছে, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য ঋণের ফাঁদ তৈরি করছে। 

শরীফ জামিল জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে কার্বন নির্গমনকারী বড় দেশগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। জিয়াউল হক মুক্তাসহ অন্যান্য বক্তারা প্যারিস চুক্তি বাস্তবায়নে জন্য একটি কাঠামোগত আইনি ব্যবস্থার সুপারিশ করেন।  


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।