adbfdba faacaf
ছবি: ইত্তেফাক

আগামী ১৬ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন শহরে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের প্রথম অ্যাওয়ে ম্যাচ। অস্ট্রেলিয়া শক্তিশালী প্রতিপক্ষ। বাফুফের অনেক সদস্য অস্ট্রেলিয়া যাবেন খেলা দেখতে। বাংলাদেশ বিশ্বকাপ বাছাই খেলছে। গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা এটাই নাকি জানা নাই বাফুফের সদস্য ইলিয়াস হোসেনের। বাফুফের এই সদস্য একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাত্কার দিয়েছেন। সেখানে প্রশ্ন ছিল বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা। সেই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে পালটা প্রশ্ন করে ইলিয়াস বলেন, ‘কে কে যেন? অস্ট্রেলিয়া আর কে? আমার ঠিক স্মরণে নাই।’ 

উত্তর বলে প্রথমে একটা দেশের নাম লেবানন বলা হয়। ইলিয়াস বললেন, ‘লেবানন। আরেকটা যেন কে ? এবারও ইলিয়াসকে বলে দেওয়া হয় ফিলিস্তিন।’ ইলিয়াস বলেন, ‘ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন।’ এই দৃশ্য দেখে ফুটবল অঙ্গনে ছি ছি পড়ল। বাফুফের সদস্য, সাবেক ফুটবলার। মোহামেডানে খেলেছেন। দেশের ফুটবল দর্শকদের চোখে পরিচিত খেলোয়াড় তিনি। সেই মানুষ অস্ট্রেলিয়া যাবেন বিশ্বকাপের বাছাই দেখতে। অথচ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ জানতে চাওয়ার প্রশ্নে লজ্জায় ফেললেন ইলিয়াস। বাফুফের সদস্য তিনি। 

বাংলাদেশ কোথায় কখন ম্যাচ খেলছে কার বিপক্ষে খেলছে কে অধিনায়ক, খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স কেমন, সবকিছু তার নখদর্পণে থাকবে। এটাই স্বাভাবিক। বরং ইলিয়াসের কাণ্ডে মুখ দেখানোই দায়। দেশের অন্য  ফুটবলারদের সম্মান নষ্ট করেছেন। একাধিক সাবেক তারকা ফুটবলারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তারা যাচ্ছেতাই ভাষায় ইলিয়াস সম্পর্কে বলেছেন। এই সব সাবেক তারকারা বললেন, ‘আমাদের নাম লেখার দরকার নেই ভাই। উপরে থুথু ছুঁড়লে নিজের উপরই পড়ে। ইলিয়াস আমাদের সঙ্গে ফুটবল খেলেছে। এখন বাফুফের দায়িত্বে অথচ তিনি জানেন না বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা। ধরে নিলাম জানেন না। সঠিক তথ্যটা জেনে নিয়ে ক্যামেরার সামনে আসলে তো এই অপমানটা হতে হতো না।’

 সাবেক ফুটবলার আব্দুল গাফফার বললেন, ‘আমার নাম দিয়ে লেখেন। ইলিয়াসদের মতো লোকের কারণেই বাফুফে বার বার সমালোচিত হয়। বাংলাদেশ কার বিপক্ষে খেলবে সেটা না জানা থাকলে লোকে যায় কেন। ইলিয়াসকাণ্ডে আমি লজ্জা পেয়েছি। ফুটবলারদের জন্য এটা লজ্জা। ইলিয়াস জাতীয় দলের অধিনায়ক ছিলেন, মোহামেডানের অধিনায়ক ছিলেন। বাফুফের নির্বাহী কমিটির সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, সোনালী অতীত ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক। তার মতো লোক যদি বলে খেলার প্রতিপক্ষ জানে না। যারা জানে না তারা কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছে ?’

বাংলাদেশ ফুটবল একটা কঠিন সময় পার করছিল। সেখান থেকে উঠে এসে একটা ভালো জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে। বিশ্বকাপের বাছাইয়ে মালদ্বীপের বিপক্ষে একটাই ম্যাচ পেয়েছিল বাংলাদেশ। এই বাধা পার হতে পারলে গ্রুপ পর্বে ৬ ম্যাচ পাবে। তখন কোন তিনটি দেশ হবে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ, এই কথাগুলো হাজার বার সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। ফেসবুক থেকে শুরু করে সব মাধ্যমে জানাজানি হয়ে গেছে। সবার মুখস্ত হয়ে গেছে। অথচ বাফুফের সদস্য ইলিয়াস হোসেন জানেন না। তার মানে ইলিয়াস হোসেনদের মাথায় অন্যসব থাকলেও ফুটবল নেই। আসল জিনিসটাই যে অনুপস্থিত। 

অথচ ইলিয়াস দেশের ফুটবলের দায়িত্ব নিয়েছেন, নির্বাচনের সময় দেশের ফুটবলের উন্নতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জাতীয় দলের সঙ্গে বার বার ট্যুর করেছেন তিনি। দল বিদেশে গেছে অনুশীলন করতে, ম্যাচ খেলতে। ইলিয়াসও দলের সঙ্গে ভ্রমণ করেছেন। এভাবে দেশ-বিদেশ ঘুরে বেড়িয়েছেন কিন্তু তাকে দিয়ে দেশের ফুটবলের কী লাভ হয়েছে, এসব কথা তারই সতীর্থ ফুটবলারদের কণ্ঠে বহুবার শোনা গেছে। সাফ হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। গত সেপ্টেম্বরে ভারতে সাফে খেলতে গেল বাংলাদেশ। তখন বাফুফের কোনো সদস্য কী খেলা দেখতে গিয়েছিলেন। সাফ দেখতে ভারতে না গলেও অস্ট্রেলিয়া যাবেন বাফুফের ছয় সদস্য। বাফুফে সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, ‘কেউ যদি খেলা দেখতে যেতে চায় আমি কি করতে পারি।’

গত মাসে জাতীয় ফুটবল দল যখন মালদ্বীপে খেলতে গিয়েছিল, তখন বাফুফের এই সদস্যরা কেউ যায়নি। মালদ্বীপ যখন ঢাকায় ফিরতি ম্যাচ খেলল তখন বাফুফের মাহফুজা আক্তার কিরণসহ এক দুই জন ছাড়া আর কাউকে মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে দেখা যায়নি। ইউকের ভিসা পেয়ে খুশিতে আত্মহারা, নিজেকে ধরে রাখতে পারেননি। তাড়াহুড়ো করে ভিসার ছবি তুলে ফেসবুকে দিলেন, সবাইকে জানিয়ে নিজের কেমন মনমানসিকতাকে তুলে ধরলেন বুঝা গেল না। ইলিয়াসরা এমনই হয়। 

ইলিয়াস হোসেন আরও ভয়ংকর তথ্য দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া ট্যুর প্রশ্নে বাফুফের আগামী নির্বাচন সম্পৃক্ত কিনা সে বিষয়ে ইলিয়াস সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘সামনে নির্বাচন, ২০২৪ সালে নির্বাচন আছে। সেই ক্ষেত্রে কোনো ডিএফএর প্রেসিডেন্ট যদি আগ্রহ প্রকাশ করে ফুটবল ফেডারেশন তাকে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত থাকবে।’ বাফুফের আগামী নির্বাচন নিয়ে কী বুঝাতে চাইলেন ইলিয়াস।   


সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।